রোপা আমন ধান লাগানোর ধুম





তাড়াশ (সিরাজগঞ্জ) প্রতিনিধিঃ চলনবিল অধ্যুষিত খাদ্য শষ্য ভান্ডার খ্যাত সিরাজগঞ্জের তাড়াশে কয়েক দিনের পর্য্যাপ্ত পরিমাণ বৃষ্টি হওয়ায় এখন রোপা আমন ধান লাগানোর ধুম পড়েছে।

এ বছর একটু দেরিতে হলেও ঠিকঠাক মতো কৃষকেরা রোপা আমন ধানের আবাদ করতে পারলে অতিরিক্ত খাদ্য শষ্য উৎপাদন হবে এমনটাই জানিয়েছেন, তাড়াশ উপজেলা কৃষি অধিদপ্তর।

সরেজমিনে এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, মাঠে মাঠে জমি চাষ, জমিতে চারা রোপনে শত শত কৃষি শ্রমিক ভোর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত ফসলী মাঠে কাজ করছেন।

তাড়াশ উপজেলা কৃষি অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, চলতি বছর উপজেলার ৮টি ইউনিয়ন ও ১টি পৌরসভা এলাকায় প্রায় ১৪ হাজার ২০০ হেক্টর জমিতে রোপা আমন ধান লাগানোর লক্ষ্য মাত্রা নির্ধারন করা হয়েছে। তবে সংশ্লিষ্ট বিভাগ আরো জানিয়েছেন, আগস্ট মাসের শেষ পর্যন্ত বৃষ্টিপাতের পরিমাণ বর্তমান সময়ের মতো অব্যহত থাকলে লক্ষ্য মাত্রার অতিরিক্ত জমিতে রোপা আমন ধান লাগানোর সম্ভবনা রয়েছে।

অবশ্য, রোপা আমান ধান আবাদের জন্য উপজেলার কৃষকদের পর্য্যাপ্ত পরিমাণ বীজতলা তৈরি আছে। পাশাপাশি এ আবাদের জন্য ইউরিয়া ৭০০ মেট্রিক টন, টিএসপি ১৯৬ মেট্রিক টন, ডিএপি ৩৩২ মেট্রিক টন, এমওপি ১৫২ মেট্রিক টন রাসানিয়ক সার মজুদ আছে। যা প্রয়োজনের চেয়ে বেশি। এ কারণে লক্ষ্যমাত্রার অতিরিক্ত জমিতে রোপা আমন ধানের আবাদ করলেও রাসানিয়ক সারের কোনই সংকট পড়বে না এমনটি জানিয়েছেন, তাড়াশ উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা আব্দুল মমিন।

মূলতঃ বোরো আবাদের পরই কৃষক রোপা, আউস এবং আমনের আবাদ করে থাকেন। এ বছর জুন-জুলাইলে তাড়াশে অনাবৃষ্টির কারণে এ আবাদে ছন্দপতন ঘটে। কিন্তু আগস্টে বৃষ্টির মাত্রা বেড়ে যাওয়া এখন কৃষক রোপা আমন ধান লাগাতে কোমর বেঁধে ফসলী মাঠে নেমে পড়েছেন বলে জানান, উপজেলার তালম ইউনিয়নের মানিকচাপর গ্রামের কৃষক রবিউল করিম।

এ দিকে দেশিগ্রাম ইউনিয়নের কাটাগাড়ি গ্রামের কৃষক জ্যোতিষ মাহাতো জানান, গত এক সপ্তাহ ধরে তাড়াশের বিভিন্ন এলাকার রোপা আমান ধানের চাষ যোগ্য জমিতে চলছে জমি চাষ, বীজতলা থেকে চারা উত্তোলন, লাগানোসহ বিবিধও কাজে হাজারও কৃষক ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন।

স্থানীয় কৃষক আব্দুর রহিম, সোলাইমান হোসেন, আকবর আলী জানান, এ বছর দেরিতে রোপা আমন ধানের আবাদ শুরু হলেও কৃষকদের পর্য্যাপ্ত পরিমাণ প্রস্তুতি থাকায় ১০ থেকে ১৫ দিনের মধ্যেই উপজেলা এলাকায় রোপা আমন ধান লাগানো কাজ শেষ করতে পারবেন।

এ প্রসঙ্গে তাড়াশ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মো. আব্দুল্লাহ আল মামুন জানান, এ উপজেলায় কৃষকদের রোপা আমন ধান চাষের ঐতিহ্য রয়েছে। তবে বৃষ্টিপাত কম থাকায় রোপা আমন আবাদ সামান্য দেরিতে হলেও খাদ্য শষ্য ধানের উৎপাদনে প্রভাব পড়বে না। বরং আমরা আশা করছি ঠিকঠাক মতো রোপা আমন আবাদ শেষ হলে তাড়াশ উপজেলায় লক্ষ্যমাত্রা অতিরিক্ত খাদ্য শষ্য উৎপাদন হবে।
Post a Comment (0)
Previous Post Next Post