আজ রুপা হত্যার ৬ বছর

 


হা‌দিউল হৃদয়:  টাইঙ্গ‌লে চাঞ্চল্যকর চলন্ত বাসে সিরাজগঞ্জের তাড়াশের মেধাবী তরুণী আইন বিভাগের শিক্ষার্থী জাকিয়া সুলতানা রূপাকে গণ ধর্ষন ও হত্যা মামলা আজ (২৫ আগষ্ট) ছয় বছর পূর্ণ হচ্ছে। 

আর গত পাঁচ বছরেও শেষ হয়নি এ চাঞ্চল্যকর ঘটনায় করা মামলার বিচার কার্য। এতে রূপার পরিবারসহ তাড়াশবাসী চরম হতাশা প্রকাশ করেছে। 

অবশ্য রুপা হত্যা মামলার বাদী রুপার বড় ভাই মো. হাফিজুর রহমান প্রামানিক বলেন, মহামান্য হাইকোটে পাঁচ বছর যাবত মামলাটির আপিল শুনানীই শুরুই হয়নি। মুলতঃ দীর্ঘ এ সময়ে মামলাটি নড়চড় না হওয়ায় আমাদের পরিবারের বিচার পাওয়ায় আশার ম্যারাথন অপেক্ষা শেষও হচ্ছে না। তিনি আরো যোগ করেন এখন অল্প সময়ে আমরা বিচার পাওয়ার আশা নিয়ে রীতিমত হতাশও হয়ে পরেছি।

রুপার মা হাসনা হেনা বেগম (৫৮) সাথে কথা তিনি বলেন, রুপা তার ভাই-বোনদের জন্য সবকিছু করার প্রবল ইচ্ছা প্রকাশ করত। স্বপ্ন দেখতো উচ্চ শিক্ষায় শিক্ষিত হয়ে একদিন বড় কর্মকর্তা হবে। এখন একটাই দাবি দ্রæত আসামিদের রায় কার্যকর করা হোক।




প্রসঙ্গত ২০১৭ সালের ২৫ আগষ্ট শিক্ষক নিবন্ধন পরীক্ষা শেষে বগুড়া থেকে ময়মনসিংহ যাওয়ার পথে সিরাজগঞ্জের তাড়াশ পৌর এলাকার আসান বাড়ী মহল্লার মৃত.জেলহক প্রামানিকের মেয়ে মেধাবী তরুনী রুপাকে চলন্ত বাসে পরিবহন শ্রমিকরা গণধর্ষণ ও হত্যা করে টাঙ্গাইল জেলার মধুপুর উপজেলায় পঁচিশ মাইল এলাকায় বনের মধ্যে মরদেহ ফেলে রেখে যায়। 

আর সে সময় রুপার পরিচয় না পাওয়ায় পুলিশ বাদী হয়ে মধুপুর থানায় গণ ধর্ষণ ও হত্যা মামলা দায়ের করেন ও ২৮ আগস্ট এ ঘটনায় জড়িত অভিযোগে ছোঁয়া পরিবহণের হেলপার শামীম, আকরাম ও জাহাঙ্গীর এবং চালক হাবিবুর ও সুপারভাইজার সফর আলীকে গ্রেফতার করেন। পরে প্রত্যেক আসামীই আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। 

পরবর্তীতে ২০১৮ সালের ১২ ফেব্রæয়ারি টাঙ্গাইলে নারী শিশু নির্যাতন ট্রাইবুনালের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ প্রথম আদালতের বিচারক আবুল মনসুর মিয়া রুপা হত্যা মামলার রায়ে ৪ আসামীর ফাঁসি ও ১ জনের ৭ বছরের সশ্রম কারাদন্ড ও আর্থিক জরিমানার রায় ঘোষণা করেন। এ ছাড়া ছোঁয়া পরিবহণের সেই বাসটি রুপার পরিবারকে ক্ষতি পুরণ হিসেবে প্রদানেরও আদেশ প্রদান করেন। এরপর ২০১৮ সালের ১৮ ফেব্রæয়ারি সাজাপ্রাপ্ত সকল আসামী খালাস চেয়ে মহামান্য হাইকোটে আপিল করেন। সে থেকে গত পাঁচ বছর যাবত মামলাটির আপিল শুনানীই শুরই হয়নি।

অবশ্য, ওই মামলায় বিচারিক কাজে নিয়োজিত ছিলেন, টাঙ্গাইল নারী শিশু নির্যাতন ট্রাইবুনালের বিশেষ পিপি নাসিমুল আক্তার নাসিম। 
তিনি রুপার গণ ধর্ষন এবং হত্যা মামলার হাইকোর্টে আপিল শুনানি প্রসঙ্গে জানান, যেহেতু মামলাটি মহামান্য হাইকোর্টের আপিল বিভাগে রয়েছে। সেখানে কার্য্যতালিকায় রুপা গণ ধর্ষণ ও হত্যা মামলাটি আসলে শুনানি হবে। তবে তা কার্য্যতালিকায় এসেছে কিনা আমার জানা নেই। এ জন্য আদালতে বাদী খোঁজ নেওয়ার পরামর্শ দেন। তিনি আরো বলেন, অনেক সময় আসামীরা শুনানি কার্য্যতালিকায় না আসার জন্য নানা বাহানা করে সময় ক্ষেপন করেন।  
Post a Comment (0)
Previous Post Next Post